তাকদির
রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
ۣالَّذِیۡ لَهٗ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ وَ لَمۡ یَتَّخِذۡ وَلَدًا وَّ لَمۡ یَکُنۡ لَّهٗ شَرِیۡکٌ فِی الۡمُلۡکِ وَ خَلَقَ کُلَّ شَیۡءٍ فَقَدَّرَهٗ تَقۡدِیۡرًا ﴿۲﴾
যার অধিকারে রয়েছে আসমান ও যমীনের মালিকানা; আর তিনি কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং সার্বভৌমত্বে তাঁর কোন শরীক নেই। তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর তাদের পরিমিতভাবে ভাগ্য নির্ধারণ করেছেন। (সুরা ফুরকান-২)
وَ اَنۡ لَّیۡسَ لِلۡاِنۡسَانِ اِلَّا مَا سَعٰی ﴿ۙ۳۹﴾
আর এই যে, মানুষ যা চেষ্টা করে, তাই সে পায়। (সুরা নাজম-৩৯)
উল্লেখ্য যে, চেষ্টার পর মানুষ যা পেয়ে থাকে সেটাই তাকদির।
اِنَّا کُلَّ شَیۡءٍ خَلَقۡنٰهُ بِقَدَرٍ ﴿۴۹﴾
আমি প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিতরূপে (তাকদির-সহকারে) সৃষ্টি করেছি । (সুরা কামার-৪৯)
وَ کَمۡ مِّنۡ مَّلَکٍ فِی السَّمٰوٰتِ لَا تُغۡنِیۡ شَفَاعَتُهُمۡ شَیۡئًا اِلَّا مِنۡۢ بَعۡدِ اَنۡ یَّاۡذَنَ اللّٰهُ لِمَنۡ یَّشَآءُ وَ یَرۡضٰی ﴿۲۶﴾
আর আসমানসমূহে অনেক ফেরেশতা রয়েছে, তাদের সুপারিশ কোনই কাজে আসবে না। তবে আল্লাহ যাকে ইচ্ছা করেন এবং যার প্রতি তিনি সন্তুষ্ট, তার ব্যাপারে অনুমতি দেয়ার পর। (সুরা নজম-২৬)
সুলায়মান (আঃ)-এর হিকমতপূর্ণ বিচার
আল্লাহর রাসূল (সা:) বলেছেন,দু’জন মহিলা ছিল, তাদের সাথে দু’টি সন্তানও ছিল। হঠাৎ একটি বাঘ এসে তাদের একজনের ছেলেকে নিয়ে গেল। সঙ্গের একজন মহিলা বলল,‘তোমার ছেলেটিকেই বাঘে নিয়ে গেছে’। অন্য মহিলাটি বলল,‘না,বরং বাঘে তোমার ছেলেটি নিয়ে গেছে’। অতঃপর উভয়ে এ বিষয়ে দাঊদ (আঃ)-এর নিকট বিরোধ মীমাংসার জন্য বিচারপ্রার্থী হ’ল। তখন তিনি ছেলেটির বিষয়ে বয়ষ্কা মহিলাটির পক্ষে রায় দিলেন। অতঃপর তারা উভয়ে বেরিয়ে দাঊদ (আঃ)-এর পুত্র সুলায়মান (আঃ)-এর নিকট দিয়ে যেতে লাগল এবং তারা দু’জনে তাঁকে ব্যাপারটি জানালেন। তখন তিনি লোকদেরকে বললেন,তোমরা আমার নিকট একখানা ছোরা নিয়ে আস। আমি ছেলেটিকে দু’টুকরা করে তাদের দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেই। এ কথা শুনে অল্প বয়ষ্কা মহিলাটি বলে উঠল,তা করবেন না, আল্লাহ আপনার উপর রহম করুন। ছেলেটি তারই। তখন তিনি ছেলেটি সম্পর্কে অল্প বয়ষ্কা মহিলাটির অনুকূলে রায় দিলেন।
(বুখারী হা/৩৪২৭ ‘নবীদের কাহিনী’ অধ্যায়, অনুচেছদ-৪০, মুসলিম হা/১৭২০, মিশকাত হা/৫৭১৯)।
শিক্ষা:
- সন্তানের প্রতি মায়ের ভালবাসা অপরিসীম।
- সুলায়মান (আঃ)-এর বিচক্ষণতা।
- প্রজ্ঞা ও দূরদর্শিতা ন্যায়বিচারের পূর্বশর্ত।
স্বাক্ষাতের সুন্নাত
একজন মুসলিমের সাথে সাক্ষাতে সুন্নাহগুলো:-
১। সালাম প্রদান:
রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, “কোন ইসলাম উত্তম (কাজের ক্ষেত্রে)?’ তিনি বলেন, ‘লোকদের খাবার খাওয়ানো এবং তোমার পরিচিত ও তোমার অপরিচিতকে সালাম প্রদান।”
২। সালামকে বর্ধিত করা:
‘ওয়ালাইকুমুস সালাম’ এর সাথে ‘ওয়ারাহতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ’ এর মাধ্যমে, এতে তিরিশটি নেকী হয়।৫০ একজন মুসলিম দিনে রাতে বহুবার সালাম উচ্চারণ করে থাকে।
মনে রাখবেন একজন বিদায় নেয় তখনও পূর্ণ সালাম দেয়া উচিত:
যখন তোমাদের কেউ সাক্ষাতে আসে তখন বলবেঃ সালাম, এবং যখন কেউ বিদায় নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবে তখনও বলবেঃ সালাম।
৩। হাসিমুখে সাক্ষাত, যেমন নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
কোন ভাল জিনিসকেই ছোট করে দেখবে না- যদিও তা তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাতও হয়।
৪। করমর্দন (হাতে *মুসাফা) করা-
এমন দুইজন মুসলিম নেই যারা পরষ্পর সাক্ষাত করে এবং হাত মুসাহা করে, তারা তাদের আলাদা হবার পূর্বেই ক্ষমা করে দেয়া হয়।
৫। কালিমা তাইয়্যেবাহ (উত্তম কথা) বলা:
وَقُلْ لِعِبَادِي يَقُولُوا الَّتِي هِيَ أَحْسَنُ ۚ إِنَّ الشَّيْطَانَ يَنْزَغُ بَيْنَهُمْ ۚ إِنَّ الشَّيْطَانَ كَانَ لِلْإِنْسَانِ عَدُوًّا مُبِينًا
“আমার বান্দাদেরকে বলুন যা উত্তম তা বলতে। নিশ্চয়ই শয়তান তাদেরকে তাদের মধ্যে মন্দের প্ররোচনা দেয়, নিশ্চয়েই শয়তান মানুষের স্পষ্ট শত্রু।”
নবী করীম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন;
“একটি উত্তম কথা হলো একটি সাদাকাহ।”
কালিমা তাইয়্যেবার মধ্যে রয়েছে আল্লাহর স্মরণ, দো’আ, সালাম, অন্যদের প্রশংসা করা তাদের ভাল কর্মাবলীর জন্য, উত্তম ব্যবহার, উত্তম আচরণ এবং কর্ম।
পুং মৈথুন এবং স্ত্রীর মলদ্বারে সঙ্গম করা
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿وَلُوطًا إِذۡ قَالَ لِقَوۡمِهِۦٓ أَتَأۡتُونَ ٱلۡفَٰحِشَةَ مَا سَبَقَكُم بِهَا مِنۡ أَحَدٖ مِّنَ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٨٠ إِنَّكُمۡ لَتَأۡتُونَ ٱلرِّجَالَ شَهۡوَةٗ مِّن دُونِ ٱلنِّسَآءِۚ بَلۡ أَنتُمۡ قَوۡمٞ مُّسۡرِفُونَ ٨١﴾ [الاعراف: ٨٠، ٨١]
“এবং লূতকেও পাঠিয়েছিলাম, সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল, ‘তোমরা এমন অশ্লীল কাজ করছ যা তোমাদের পূর্বে বিশ্বে কেউ করে নি। তোমরা তো কাম-তৃপ্তির জন্য নারীকে বাদ দিয়ে পুরুষের নিকট গমন কর, তোমরা তো সীমালঙ্গনকারী সম্প্রদায়’।” [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ৮০-৮১]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
«من وجدتموه يعمل عمل قوم لوط فاقتلوا الفاعل والمفعول».
“তোমরা কাউকে লূত সম্প্রদায়ের কাজ (সমকাম) করতে দেখলে, যে করে এবং যার সাথে করা হয় উভয়কে হত্যা কর।”[ তিরমিযী, হাদীস নং ১২৭৬।]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন,
«لا ينظر الله إلى رجل اتى رجلا او إمرآة في الدبر».
“আল্লাহ তা‘আলা ঐ ব্যক্তির প্রতি দৃষ্টি দিবেন না, যে কোনো পুরুষের সাথে সমাকামিতায় লিপ্ত হয় অথবা কোনো মহিলার পিছনের রাস্তা দিয়ে সহবাস করে।” [তিরমিযী, হাদীস নং ১৮৬, সহীহ আল-জামে।]