শয়তানের ধোঁকা থেকে বাঁচার নির্দেশ
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ کُلُوۡا مِمَّا فِی الۡاَرۡضِ حَلٰلًا طَیِّبًا ۫ۖ وَّ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّهٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۶۸﴾
হে মানুষ, যমীনে যা রয়েছে, তা থেকে হালাল পবিত্র বস্তু আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট শত্রু। (সুরা বাকারা-১৬৮)
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوا ادۡخُلُوۡا فِی السِّلۡمِ کَآفَّۃً ۪ وَ لَا تَتَّبِعُوۡا خُطُوٰتِ الشَّیۡطٰنِ ؕ اِنَّهٗ لَکُمۡ عَدُوٌّ مُّبِیۡنٌ ﴿۲۰۸﴾
হে মুমিনগণ, তোমরা ইসলামে পূর্ণরূপে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না । নিশ্চয় সে তোমাদের জন্য স্পষ্ট শত্রু। (সুরা বাকারা-২০৮)
اَلشَّیۡطٰنُ یَعِدُکُمُ الۡفَقۡرَ وَ یَاۡمُرُکُمۡ بِالۡفَحۡشَآءِ ۚ وَ اللّٰهُ یَعِدُکُمۡ مَّغۡفِرَۃً مِّنۡهُ وَ فَضۡلًا ؕ وَ اللّٰهُ وَاسِعٌ عَلِیۡمٌ ﴿۲۶۸﴾ۖۙ
শয়তান তোমাদেরকে দরিদ্রতার প্রতিশ্রুতি দেয় এবং অশ্লীল কাজের আদেশ করে। আর আল্লাহ তোমাদেরকে তার পক্ষ থেকে ক্ষমা ও অনুগ্রহের প্রতিশ্রুতি দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। (সুরা বাকারা-২৬৮)
اِنَّمَا ذٰلِکُمُ الشَّیۡطٰنُ یُخَوِّفُ اَوۡلِیَآءَهٗ ۪ فَلَا تَخَافُوۡهُمۡ وَ خَافُوۡنِ اِنۡ کُنۡتُمۡ مُّؤۡمِنِیۡنَ ﴿۱۷۵﴾
সে তো শয়তান। সে তোমাদেরকে তার বন্ধুদের (কাফের, মুশরিক, মনাফিক) ভয় দেখায়। তোমরা তাদেরকে ভয় করো না, বরং আমাকে ভয় কর, যদি তোমরা মুমিন হও। (সুরা আলে ইমরান-১৭৫)
জাবের (রাঃ)-এর মেহমানদারী ও রাসূল (সাঃ)-এর মু’জিযা
জাবের (রাঃ) বলেন, খন্দকের যুদ্ধের প্রাক্কালে আমরা পরিখা খনন করছিলাম। এমন সময় একটা শক্ত পাথর দেখা দিল। তখন লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট এসে বলল, ‘পরিখা খননকালে একটি শক্ত পাথর পাওয়া গেছে।’ তিনি বললেন, ‘আচ্ছা আমি নিজেই খন্দকের মধ্যে নামব।’ অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন, সে সময় তাঁর পেটে পাথর বাঁধা ছিল। আর আমরাও তখন তিনদিন পর্যন্ত কিছু খেতে পায়নি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কোদাল হাতে নিয়ে পাথরটির উপর আঘাত করলে তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বালুকণায় পরিণত হয়।
জাবের (রাঃ) বলেন, আমি আমার স্ত্রীর নিকটে এসে বললাম, ‘তোমার কাছে খাওয়ার কিছু আছে কি? আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে ভীষণ ক্ষুধার্ত অবস্থায় দেখলাম’। তখন সে একটি চামড়ার পাত্র হতে এক ছা’ পরিমাণ যব বের করল। আমাদের একটি মোটাতাজা বকরীর বাচ্চা ছিল। তা আমি যবেহ করলাম আর আমার স্ত্রী যব পিষল। অবশেষে আমরা হাঁড়িতে গোস্ত চড়ালাম। অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নিকট এসে চুপে চুপে বললাম, ‘আল্লাহর রাসূল (সাঃ)! আমরা একটি বকরীর বাচ্চা যবেহ করেছি। আর এক ছা’ যব ছিল, আমার স্ত্রী তা পিষেছে। সুতরাং আপনি আরো কয়েকজন সঙ্গে নিয়ে চলুন।’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উচ্চৈঃস্বরে সবাইকে বললেন, ‘হে পরিখা খননকারীগণ! এস তোমরা তাড়াতাড়ি চল, জাবের তোমাদের জন্য খাবার তৈরী করেছে।’ অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) আমাকে বললেন, ‘তুমি বাড়ী ফিরে যাও। আমি না আসা পর্যন্ত গোস্তের ডেকচি নামাবে না এবং খামির থেকে রুটিও বানাবে না’। এরপর তিনি লোকজনসহ উপস্থিত হলেন। তখন আমার স্ত্রী খামিরগুলি রাসূলের সম্মুখে দিলে তিনি তাতে লালা মিশিয়ে দিয়ে বরকতের জন্য দো’আ করলেন। অতঃপর ডেকচির নিকট অগ্রসর হয়ে তাতেও লালা মিশিয়ে বরকতের জন্য দো’আ করলেন। এরপর বললেন, ‘তুমি আরো রুটি প্রস্তুতকারিণীদের ডাক, যারা তোমার সাথে রুটি বানাবে। আর চুলার উপর থেকে ডেকচি না নামিয়ে তুমি তা থেকে তরকারী নিয়ে পরিবেশন কর’।
জাবের (রাঃ) বলেন, ‘ছাহাবীদের সংখ্যা ছিল এক হাজার। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি, সকলে তৃপ্তি সহকারে খেয়ে চলে যাওয়ার পরও ডেকচি ভর্তি তরকারী ফুটতেছিল এবং প্রথম অবস্থার ন্যায় আটার খামির হাতে রুটি প্রস্তুত হচ্ছিল।’
[মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৫৮৭৭, ‘ফাযায়েল ও শামায়েল’ অধ্যায়, ‘মু’জিযা’ অনুচ্ছেদ]
শিক্ষা:
- কর্মীদের উৎসাহ ও প্রেরণা দানের জন্য নেতাকে তাদের সাথে যে কোন কাজে নিজ হাতে সহযোগিতা করা।
- কর্মীদের অন্যতম কর্তব্য হল নেতার সার্বিক বিষয়ের প্রতি তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা ।
- রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর পক্ষ হতে প্রকাশিত প্রত্যেক মু’জিযার প্রতি সুনিশ্চিত বিশ্বাস রাখা।
- দ্বীনের পথে যত কষ্টই আসুক না কেন হাসিমুখে তা বরণ করে নেওয়া।
অযুর সুন্নাত তরীকা
- প্রথমে মনে মনে অযুর নিয়ত করবে
- ‘বিসমিল্লাহ’ বলবে।
- ডান হাতে পানি নিয়ে দুই হাত কব্জি সমেত ধৌত করবে এবং আঙ্গুলসমূহ খিলাল করবে।
- এরপর ডান হাতে পানি নিয়ে ভালভাবে কুলি করবে ও প্রয়োজনে নতুন পানি নিয়ে নাকে দিয়ে বাম হাতে ভালভাবে নাক ঝাড়বে।
- কপালের গোড়া থেকে দুই কানের লতী হয়ে থুতনির নিচ পর্যন্ত পুরো মুখমন্ডল ধৌত করবে ও দাড়ি খিলাল করবে। এজন্য এক অঞ্জলি পানি নিয়ে থুতনির নিচে দিবে। যদি দাড়ি ঘন হয়, সেই ক্ষেত্রে শুধু উপরের অংশ ধোয়া জরুরি। ভেতরে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়। তবে পাতলা হলে চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছানো জরুরি।
- প্রথমে ডান ও পরে বাম হাত কনুই সমেত ধৌত করবে।
- পানি নিয়ে দু’হাতের ভিজা আঙ্গুলগুলি মাথার সম্মুখ হতে পিছনে ও পিছন হতে সম্মুখে বুলিয়ে একবার পুরো মাথা মাসাহ করবে।
- মাথার সাথে ভিজা শাহাদাত আংগুল দ্বারা কানের ভিতর অংশে ও বুড়ো আংগুল দ্বারা পিছন অংশে মাসাহ করবে।
- ডান ও বাম পায়ের টাখনু সমেত ভালভাবে ধুইবে ও বাম হাতের আঙ্গুল দ্বারা পায়ের আঙ্গুল সমূহ খিলাল করবে।
- অযুর দোয়া পাঠ করবে।
মহিলা পুরুষের বেশ ধারণ করা এবং পুরুষের
মহিলার বেশ ধারণ করা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
النساء بالرجال والمتشبهين من الرجال من المتشبهات الله لعن
“আল্লাহ তা’আলা পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদেরকে অভিশাপ করেছেন এবং মহিলাদের বেশ ধারনকারী পুরুষের উপর অভিশাপ করেছেন।” (আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৫৭৪। )