পর্দা
یٰبَنِیۡۤ اٰدَمَ قَدۡ اَنۡزَلۡنَا عَلَیۡکُمۡ لِبَاسًا یُّوَارِیۡ سَوۡاٰتِکُمۡ وَ رِیۡشًا ؕ وَ لِبَاسُ التَّقۡوٰی ۙ ذٰلِکَ خَیۡرٌ ؕ ذٰلِکَ مِنۡ اٰیٰتِ اللّٰهِ لَعَلَّهُمۡ یَذَّکَّرُوۡنَ ﴿۲۶﴾
হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে। (সুরা আ’রাফ-২৬)
قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنِیۡنَ یَغُضُّوۡا مِنۡ اَبۡصَارِهِمۡ وَ یَحۡفَظُوۡا فُرُوۡجَهُمۡ ؕ ذٰلِکَ اَزۡکٰی لَهُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰهَ خَبِیۡرٌۢ بِمَا یَصۡنَعُوۡنَ ﴿۳۰﴾
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। (সুরা নুর-৩০)
وَ قُلۡ لِّلۡمُؤۡمِنٰتِ یَغۡضُضۡنَ مِنۡ اَبۡصَارِهِنَّ وَ یَحۡفَظۡنَ فُرُوۡجَهُنَّ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا مَا ظَهَرَ مِنۡهَا وَ لۡیَضۡرِبۡنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلٰی جُیُوۡبِهِنَّ ۪ وَ لَا یُبۡدِیۡنَ زِیۡنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اٰبَآئِهِنَّ اَوۡ اٰبَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآئِهِنَّ اَوۡ اَبۡنَآءِ بُعُوۡلَتِهِنَّ اَوۡ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اِخۡوَانِهِنَّ اَوۡ بَنِیۡۤ اَخَوٰتِهِنَّ اَوۡ نِسَآئِهِنَّ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُهُنَّ اَوِ التّٰبِعِیۡنَ غَیۡرِ اُولِی الۡاِرۡبَۃِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفۡلِ الَّذِیۡنَ لَمۡ یَظۡهَرُوۡا عَلٰی عَوۡرٰتِ النِّسَآءِ ۪ وَ لَا یَضۡرِبۡنَ بِاَرۡجُلِهِنَّ لِیُعۡلَمَ مَا یُخۡفِیۡنَ مِنۡ زِیۡنَتِهِنَّ ؕ وَ تُوۡبُوۡۤا اِلَی اللّٰهِ جَمِیۡعًا اَیُّهَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ لَعَلَّکُمۡ تُفۡلِحُوۡنَ ﴿۳۱﴾
আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা নুর-৩১)
সৃষ্টজীবের প্রতি দয়া
ইবনু ওমর (রাঃ) সূত্রে নবী (ছাঃ) হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক নারী একটি বিড়ালের কারণে জাহান্নামে গিয়েছিল, সে তাকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবারও দেয়নি, ছেড়েও দেয়নি, যাতে সে যমীনের পোকা-মাকড় খেতে পারত। (বুখারী হা/৩৩১৮ ‘সৃষ্টির সূচনা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১১, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯০৩)
আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে আল্লাহ্র রাসূল (ছাঃ) হ’তে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেয়া হয়। সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। রাবী বলেন, পিপাসায় তার প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত ছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে তার উড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করাল)। এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেয়া হল’ । (বুখারী হা/৩৩২১ ‘সৃষ্টির সূচনা’ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-১৭, মুসলিম, মিশকাত হা/১৯০২)
- শিক্ষা : পশু-পাখির প্রতি সর্বদা সহানুভূতিশীল হ’তে হবে।
ইস্তিঞ্জা বা পেশাব-পায়খানার সুন্নাত তরিকা
- পেশাব পায়খানার মাথা ঢেকে রাখা সুন্নত। (ইলাউস সুনান-১/৩২৩)
- জুতা সেন্ডেল পড়ে পেশাব-পাখানায় প্রবেশ করা সুন্নাত। (ইলাউস সুনান ১/৩২৩)
- বাথরুমে প্রবেশের পূর্বে নিম্নোক্ত দোয়া পড়া সুন্নাত।
بسم الله اللهم إني أعوذ بك من الْخُبُثِ وَالْخَبَانِثِ
অর্থ: ‘আল্লাহর নামে (শুরু করছি); হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে পুরুষ ও নারী শয়তানের অনিষ্ট তথা ক্ষতি থেকে আশ্রয় চাই। (বুখারী শরীফ, হাদীস নং- ১৩৯, মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৫৬৩, ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং-২৯৩)
- দোয়া পড়ার পর প্রথমে বাম পা দ্বারা প্রবেশ করা সুন্নাত। (মিশকাত শরীফ-১/৪২, আবু দাউদ শরীফ- ১/৫)
- যথাসম্ভব বসার নিকটবর্তী হয়ে সতর খোলা এবং কিবলার দিকে মুখ বা পিঠ দিয়ে না বসা। (মিশকাত শরীফ-১/৪২)
- বসে বসে পেশাব পায়খানা করা সুন্নাত, দাঁড়িয়ে পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ করা হয়েছে। (তিরমিযী শরীফ, হাদীস নং-১২, ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং- ৩০৪)
- পেশাবের ছিটা ও পায়খানা থেকে খুব সতর্কতার সাথে বেঁচে থাকা। কেননা, অধিকাংশ কবরের আযাব পেশাবের ছিটা থেকে উত্তমরূপে পবিত্র না থাকার কারণে হয়ে থাকে। (বুখারী শরীফ ১/৩৪, মুসলিম শরীফ, হাদীস নং-৪৩৯)
- ডান হাতে লজ্জাস্থান স্পর্শ না করা সুন্নাত। (বুখারী শরীফ- ১/২৭)
- বাথরুমের বাইরে কখনও পেশাব করতে হলে পেশাবের জন্য নরম বা এমন স্থান বেছে নেওয়া যেখান থেকে পেশাবের ছিটা না লাগে। (মিশকাত শরীফ- ১/৪২, আলমগীরী-১/৫০)
- পানি খরচ করার আগে ঢিলা বা কুলুফ ব্যবহার করা সুন্নাত। (বাইহাকী- ১/১০৬)
- ঢিলা বা কুলুফ ব্যবহার ও পানি খরচের সময় বাম হাত ব্যবহার করা সুন্নাত। (আবু দাউদ শরীফ- ১/৫)
- পেশাব-পায়খানা হতে ডান পা দিয়ে বাইরে বের হওয়া সুন্নাত। (মারাকিউল ফালাহ-৪৩)
- পেশাব-পায়খানা থেকে বের হওয়ার পর এই দোয়া পড়া সুন্নাত।
غفرانك الحمدُ لله الذي اذهب عَلَى الأذى وَعَافاني
অর্থ: ‘(হে আল্লাহ!) আপনার কাছে ক্ষমা চাই। সব প্রশংসা ওই আল্লাহর জন্য; যিনি ক্ষতি ও কষ্টকর জিনিস থেকে আমাকে মুক্তি দিয়েছেন। (তিরমিযী শরীফ ১/৯, ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীস নং-২৯৭)
- কখনও খোলা মাঠে পায়খানা বা পেশাব করতে হলে কোন কিছুর আড়ালে বা এতদূর বা এমন নিচু ভূমিতে যাওয়া যাতে কারো দৃষ্টি না পড়ে। (আবু দাউদ শরীফ-১/৯)
পরনিন্দা করা
আল্লাহ তা’আলা বলেন,
وَ لَا تُطِعۡ کُلَّ حَلَّافٍ مَّهِیۡنٍ ﴿ۙ۱۰﴾ هَمَّازٍ مَّشَّآءٍۭ بِنَمِیۡمٍ ﴿ۙ۱۱﴾
“যে বেশি শপথ করে এবং যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে আপনি তার আনুগত্য করবে না।” [সূরা আল-ক্বালম, আয়াত: ১০-১১]
নমীমাহ বলা হয়, যে ব্যক্তি একের কথা অপরের নিকট বলে বেড়ায় পারস্পরিক ঝগড়া-ফাসাদ সৃষ্টি করার উদ্দেশে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি কবরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন এবং বললেন: এ কবরবাসীদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে কোনো বড় ব্যাপারে নয়, তাদের একজন এমন ব্যক্তি যে একের কথা অন্যের নিকট লাগাতো। (সহীহ বুখারী)